মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৪:০৭ অপরাহ্ন

আস্তানায় নারী নিয়ে ফুর্তি করেন পীর, অভিযোগ সাবেক স্ত্রীর

আস্তানায় নারী নিয়ে ফুর্তি করেন পীর, অভিযোগ সাবেক স্ত্রীর

স্বদেশ ডেস্ক:

রাজশাহীর তানোর উপজেলার কথিত এক পীরের বিরুদ্ধে নারী নিয়ে রাতভর ফুর্তি করার অভিযোগ তুলেছেন তার সাবেক স্ত্রী। উপজেলার শিতলী পাড়া গ্রামের ওই পীর তার বাড়িতেই খানকায়ে মাজার শরীফ গড়ে সেখানে মাদক সেবনের পর মাতাল হয়ে এই অপকর্ম করেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় গ্রামের ৯৭ জনের স্বাক্ষর নিয়ে ওই গ্রামের কাওসার আলী ও পীরের সাবেক স্ত্রী বাদী হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর পৃথক দুটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বেসরকারি সংস্থা রুল-ফাও তানোর শাখার ম্যানেজার শেখ ইয়াসিন আলী ওয়ারেছী গত প্রায় পাঁচ বছর আগে ডাক বাংলো সংলগ্ন শিতলী পাড়ায় জমি কিনে তৈরি করা নিজ বাড়িতে নিজেকে পীর দাবি করে আস্তানা গড়ে তুলেছেন। এর আগে প্রায় তিন বছর ভাড়া বাসায় আস্তানার কার্যক্রম চালিয়েছেন তিনি। সেখানে সার্বক্ষণিক দুজন নারীসহ চার থেকে পাঁচজন অবস্থান করেন। আস্তানায় প্রতি বৃহস্পতিবার ছাড়াও মাসের বিশেষ একদিনে সন্ধ্যার পর বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে রাতভর গান-বাজনাসহ জিকির আজগার করেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, আস্তানায় প্রতিদিন সন্ধ্যার পর বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত অর্ধশত নারী-পুরুষ নিয়ে রাতভর নেশা করে মাতলামির ছলে জিকির আজগারসহ নারীদের নিয়ে ফুর্তির মজমা করেন ওই পীর। দিনদিন ভক্তের আসা-যাওয়া বৃদ্ধি পাওয়ায়সহ রাতভর এমন ঘটনার প্রতিবাদ করায় স্ত্রীকে নির্যাতনের পর তালাক দিয়ে এক ছেলে ও এক মেয়েসহ বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।

পীরের তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, ‘বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পুরুষ ভক্তদের পাশে শুয়ে দৈহিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার জন্য আমি ‍ও আমার মেয়েকে দীর্ঘদিন ধরে চাপ দিচ্ছিল পীর ইয়াছিন আলী ওয়ারেছী। এতে রাজি না হওয়ায় গত সাড়ে তিন মাস আগে সে আমাকে ডিভোর্স দিয়ে মেয়ে ও ছেলেসহ বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়।’

পীর ইয়াছিন আলীর সাবেক স্ত্রী আরও বলেন, ‘ওই বাড়িতে আমার নামে দুই শতক জমি আছে কিন্তু পীর তা জবর দখল করে রেখেছে। আর এই বাড়িতে পীরের আস্তানার নামে নারী পুরুষদের দিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করা হচ্ছে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে প্রশাসন কোনো ব্যাবস্থা নিচ্ছে না।’

জানতে চাইলে পীর শেখ ইয়াছিন আলী ওয়ারেছী সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকেই ধর্মপরায়ণ মানুষ। এখানে আমার ভক্তরা আসে জিকির আজগার ও ধর্ম পালন করেন। আমার ডিভোর্স দেওয়া স্ত্রী গ্রামের কিছু কুচক্রীমহলের সাথে হাত মিলিয়ে আমাকে এখান থেকে খানকায়ে মাজার শরীফ তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার ডিভোর্স দেওয়া স্ত্রী শিতলী পাড়াস্থ আমার বাড়ির পাশের জৈনক কাউসার আলীর বাড়িতে কেন থাকছে? কিভাবে থাকছে? আমার ডিভোর্স দেওয়া স্ত্রী তাদের সাথে হাত মিলিয়ে তাদের বাড়িতে থেকে আমাকে এখান থেকে তাড়ানোর জন্য নিজেই বিভিন্ন অপকর্ম করছে।’

এ বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও তানোরের ইউএনও সুশান্ত কুমার মাহাতোর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল হাসান বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877